- মিথুন রাশি হল রাশি চক্রের তৃতীয় রাশি।বুধ হল উক্ত রাশির অধিপতি।
- মিথুন রাশি থেকে কালপুরুষের সাহস,পরাক্রমের বিচার করা হয়।
- এছাড়াও উক্ত রাশি থেকে কালপুরুষের ছোট ভাইবোন,পাড়া-পড়শী,ছোট যাত্রা, লেখনী কার্য্য,সামাজিক সম্পর্ক ইত্যাদির বিচার করা হয়।
শনি গ্রহের বৈশিষ্ট্য
- শনি হলেন কর্ম ও ন্যায়-নীতির কারক গ্রহ।আমরা যেমন কর্ম করি, শনিদেব আমাদের তেমন ফল প্রদান করেন।
- ভালো কর্ম করলে ভালো ফল,আর খারাপ কর্ম করলে খারাপ ফল।
- শনিদেব কর্মফল বিতরণে কখনও পক্ষপাতিত্ব করেন না ।
- খারাপ কর্ম করলে খারাপ ফল পেতেই হয়।খারাপ কর্মের খারাপ ফল পাওয়ার আগ অব্দি কোনভাবেই নিস্তার পাওয়া যায় না।যার কারণে উনি ক্রুর গ্রহ হিসাবে হিসাবে পরিচিত।
রাশিচক্রে শনির আধিপত্য
- রাশি চক্রের দশম ও একাদশ ঘরের অধিপতি হলেন শনি।অর্থাৎ কর্ম ও লাভের ঘরের অধিপতি শনি।
- তুলা রাশিতে শনিদেব উচ্চ্স্থ হন এবং মেষ রাশিতে নীচস্থ।
- অষ্টম ঘরের নৈসর্গিক কারক মানা হয় শনিদেবকে।
মিথুন লগ্ন ও রাশিতে শনির আধিপত্য ও ফলের বিচার
- মিথুন লগ্ন ও রাশিতে শনি হলেন অষ্টম ও ভাগ্য স্থানের অধিপতি।
- অষ্টম স্থানকে জন্ম কুণ্ডুলীর অশুভ ঘরের একটি এবং ভাগ্যস্থানকে শুভ ঘরের একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
- অষ্টম ঘরে শনির মকর রাশি ও নবম ঘরে কুম্ভ রাশির অবস্থান।
- মকর রাশিকে শনির সাধারণ রাশি এবং কুম্ভ রাশিকে মূল ত্রিকোণ রাশি বলা হয়।
- মকর রাশি থেকে মিথুন লগ্ন ও রাশির দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা,মৃত্যু বা মৃত্যুতুল্য কষ্টের বিচার করা হয়।
- গুপ্তর্ধন, গুপ্তবিদ্যার মত বিষয়ের অর্থাৎ আশাতীত লাভেরও বিচার মকর রাশি থেকে করা হয়।
- কুম্ভ রাশি থেকে ভাগ্য,ধর্মজ্ঞান,উচ্চশিক্ষা,বিদেশযাত্রা ইত্যাদির বিচার করা হয়।
- সেই হিসাব অনুযায়ী শনি উক্ত লগ্ন ও রাশির ক্ষেত্রে একটি শুভ ও একটি অশুভ ঘরের অধিপতি।
- যার ফল স্বরূপ যে কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে ,তাহলে শনি উক্ত লগ্ন ও রাশির ক্ষেত্রে কোন ঘরের ফল প্রদান করেন!!
আর এর উত্তর হল শনিদেব উক্ত লগ্ন বা রাশিতে দুটি ঘরেরই ফল প্রদান করেন।
- মিথুন লগ্ন ও রাশিতে বুধ, শুক্র ও শনিকে কারক গ্রহ হিসাবে মানা হয়।
- কারণ বুধ,শুক্র ও শনি হল উক্ত লগ্ন ও রাশির ধর্ম ত্রিকোণ ভাবের অধিপতি।
- মঙ্গলকে সবচেয়ে অশুভ গ্রহ হিসাবে মানা হয়।
- গুরু, চন্দ্র ও সূর্যকেও অকারক হিসাবে মানা হয়।
- চন্দ্র ও গুরু দ্বিতীয় ও সপ্তম ঘরের অধিপতি হওয়ায় মারক হিসাবে বিবেচিত।
- শনির মকর রাশির ফল
- শনির দশা-অন্তর্দশায় যদি মঙ্গল,সূর্য বা চন্দ্রের দশা আসে,তাহলে শনি মকর রাশির ফল প্রদান করেন।
- যেমন শনির দশায় যদি মঙ্গলের অন্তর্দশা আসে তখন শনি মকর রাশির ফল প্রদান করেন।
- মঙ্গলের দশায় যদি শনির অন্তর্দশা আসে তখনও শনি মকর রাশির ফল প্রদান করেন।
- ঐ সময়ে উক্ত লগ্ন ও রাশির জাতক-জাতিকারা দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হয়।তথা মানুষিক ও শারীরিক বিভিন্ন রকমের কষ্টের সম্মুখীন হতে হয় ।
শনির কুম্ভ রাশির ফল -
- শনির দশা-অন্তর্দশায় যখন বুধ ও শুক্রের দশা-অন্তর্দশা আসে তখন শনি কুম্ভ রাশির প্রদান করেন।
- যেমন-শনির দশায় যদি বুধের অন্তর্দশা আসে ,তাহলে শনি কুম্ভ রাশির ফল প্রদান করেন।
- বুধের দশায় যদি শনির অন্তর্দশা আসে,তাহলেও শনি কুম্ভ রাশির ফল প্রদান করেন।
- ওই সময়ে উক্ত লগ্ন ও রাশির জাতক-জাতিকাদের ভাগ্যের উন্নতি,উচ্চশিক্ষা লাভ,বিদেশ যাত্রার মত শুভফল লাভ করেন ।
- বিঃদ্রঃ -
- দশা ও অন্তর্দশার ফলাফল দুই গ্রহের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং অন্যান্য গ্রহের অবস্থানের উপরও নির্ভর করে।
- তাই শুধুমাত্র উপরি বর্ণিত বিশ্লেষণের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া কোনভাবেই ঠিক নয়।
- যোগ্য জ্যোতিষীর পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উচিত।
শনির শুভফল লাভের উপায়
- শনি শুভ বা অশুভ যে ঘরের অধিপতিই হন না কেন,শনির আদর্শ অনুসারে চলার মধ্যে দিয়ে শুভফল অর্জন করা যায়।
- শনি কর্ম ও ন্যায় নীতির কারক গ্রহ।তাই ন্যায় নীতি বজায় রেখে কর্মকে প্রাধান্য দিয়ে চললে শনির শুভফল অর্জন করা যায়।
মন্ত্র সাধনা ও পূজাপাঠ
- শনিদেবের পূজার্চনা ও মন্ত্রপাঠ শুভফল লাভে সহায়ক হয়।
- শনির বীজমন্ত্র সহ অন্যান্য যে কোন মন্ত্রের প্রতিদিন 108 বার জপ দ্বারা শনির আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
- বজরাংবলীর পূজাপাঠ ও আরাধনা দ্বারাও শনিদেবের শুভফল অর্জন করা যায়।
উপসংহার
- পরিশেষে বলা যায় যে মিথুন লগ্ন ও রাশিতে শনি শুভ ও অশুভ দু ধরনের ফলই প্রদান করেন।
- তবে শনির আদর্শ অনুসারে চলার মধ্যে দিয়ে অশুভ ফল কম করে শুভ ফলের বৃদ্ধি করা যায়।
জন্ম কুণ্ডুলীর বিষয়ে জানতে আরোও পড়ুন
- মিথুন লগ্ন ও রাশির সুখের উপায়।
- সপ্তম ঘরে শনি ও শুভফল লাভের উপায়।
- লগ্ন ও রাশিতে শনি ও শুভফল লাভের উপায়।
- ধন ও পারিবারিক সমস্যায় ন্যায়-নীতির ভূমিকা ।
- কর্কট লগ্ন ও রাশির পরিশ্রমের সহজ উপায়।
- মেষ লগ্ন ও রাশির ষষ্ঠ ঘরে শনির অবস্থান ও শুভফল লাভের উপায়।
- মিথুন লগ্ন ও রাশির জন্য উপযুক্ত ব্যবসা ও সাফল্যের উপায়।
- ধন আগমনের সময়কাল।