- জ্যোতিষ শাস্ত্রে ধন ও পরিবার সম্বন্ধীয় বিষয়ের বিচার জন্ম কুণ্ডুলীর দ্বিতীয় ঘর থেকে করা হয়।
- দ্বিতীয় ঘর,ঘরের অধিপতি ও নৈসর্গিক কারক গুরুর শুভাশুভ অবস্থান ও বলাবলের উপর নির্ভর করে যে কোন জাতক-জাতিকার ধন ও পারিবারিক সুখ-শান্তির বিষয়।
ধন পরিবারের ঘরের শুভাশুভ ফলের বিচার
- দ্বিতীয় ঘর,ঘরের অধিপতি ও উক্ত ঘরের নৈসর্গিক কারক গ্রহ দেবগুরু বৃহস্পতি শুভ অবস্থানে থাকলে, বলাবল যুক্ত হলে ধন ও পারিবারিক বিষয়ে সুখ-শান্তি লাভ হয়।
- দ্বিতীয় ঘর অশুভ অবস্থানে থাকলে,পাপ গ্রহের দ্বারা পীড়িত হলে বা উক্ত ঘরে কোন অশুভ গ্রহ অবস্থান করলে সুখ-শান্তির অভাব ঘটে।
- ধনের অভাব,পারিবারিক মনমালিন্য, খাবার-দাবারে সমস্যা,বাণীর কারণে সমস্যা ইত্যাদি ।
- খাদ্যাভ্যাস সমস্যা তথা হজমের সমস্যা বা বদ হজমের মত বিভিন্ন সমস্যা ।
- বাণীর কারণে সমস্যা অর্থাৎ দ্বিতীয় ঘর ক্রুর গ্রহ দ্বারা পীড়িত হলে ভাষার দ্বন্দ্ব বা ভুল বুঝাবুঝির কারণে সমস্যা বা শত্রু বৃদ্ধি।
ধন ও পারিবারিক বিষয়ে কালপুরুষের কুণ্ডলীর গুরুত্ব:
- জন্মকুণ্ডলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডলী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- কন্যা রাশি কালপুরুষের কুণ্ডলীতে ষষ্ঠ ঘরে অবস্থিত, যা রোগ, ঋণ ও শত্রুর বিচার করে।
- সিংহ লগ্ন/রাশির দ্বিতীয় ঘর:
- দ্বিতীয় ঘরে (ধন ও পরিবার) কন্যা রাশির অবস্থান।
- কন্যা রাশি চ্যালেঞ্জিং রাশি হিসেবে বিবেচিত, কারণ এটি রোগ, ঋণ ও শত্রুর প্রতিনিধিত্ব করে।
- সমস্যার সম্মুখীন:
- দ্বিতীয় ঘরে কন্যা রাশির প্রভাবে ধন সঞ্চয়ে বাধা।
- পারিবারিক মনোমালিন্য বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।
- গ্রহের প্রভাব:
- শুভগ্রহের প্রভাবে সমস্যার মাত্রা কমে।
- অশুভ গ্রহের প্রভাবে সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
কন্যা রাশি ও ধন-পারিবারিক স্থিতিশীলতার জন্য শুভ ফল লাভের উপায়
- কন্যা রাশির শুভ ফল লাভের ক্ষেত্রে ষষ্ঠ ঘরের প্রভাবের কারণে দৈনন্দিন কর্ম, সেবা এবং স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
- এখানে ফোকাস থাকে শৃঙ্খলা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়।
- এটি দ্বিতীয় ঘরের(ধন ও পরিবার) কন্যা রাশির সাথে যুক্ত হলে আর্থিক সমৃদ্ধি, পারিবারিক স্থিতিশীলতা এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
- সঠিক মনোযোগ ও কঠোর পরিশ্রম:
- কন্যা রাশি জন্মকুণ্ডলীর যে ঘরেই থাকুক না কেন, সেই ঘরের করণীয় কাজে পূর্ণ মনোযোগ, অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার সাথে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
- সিংহ লগ্নের ক্ষেত্রে, এর অর্থ হলো ধন সঞ্চয়, পরিবার পরিচালনা এবং খাদ্যাভ্যাসের মতো দ্বিতীয় ঘরের কাজগুলিতে সমান মনোযোগ ও পরিশ্রম দেওয়া।
- শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা পালন:
- দৈনন্দিন জীবনে নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
- পারিবারিক স্থিতিশীলতা ও আর্থিক সমৃদ্ধির জন্য এটি অপরিহার্য।
- খাদ্যাভ্যাসে নিয়মানুবর্তিতা না থাকলে গ্যাস্ট্রিক বা পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেহেতু দ্বিতীয় ঘর খাদ্যের বিচার করে।
- জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ধন ও পরিবারের ক্ষেত্রে, নিয়মানুবর্তিতা না থাকলে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
- শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দিলে পারিবারিক ও আর্থিক জীবনে সমস্যা কমে এবং সুখ বৃদ্ধি পায়।
- ধ্যান, পূজা ও মন্ত্রচর্চা
- সূর্যদেবের পূজা:
- সিংহ লগ্ন/রাশির অধিপতি সূর্যের ধ্যান, পূজা ও মন্ত্রচর্চা করা।
- বুধ দেবতার পূজা:
- দ্বিতীয় ঘরের অধিপতি বুধের ধ্যান, পূজা ও মন্ত্রচর্চা করা।
- মন্ত্র জপ:
- সূর্য ও বুধের বীজমন্ত্র বা অন্য মন্ত্র প্রতিদিন ১০৮ বার জপ করা।
- শুভফল বৃদ্ধি:
- মন্ত্রচর্চার মাধ্যমে ধন, পারিবারিক বিষয় ও সার্বিক ক্ষেত্রে শুভফল বৃদ্ধি।
- ভগবান শিবের পূজা:
- শিবের পূজা ও আরাধনা শুভফল বৃদ্ধিতে সহায়ক।
- নারায়ণের পূজা:
- ভগবান নারায়ণের পূজা ও আরাধনা শুভফল বৃদ্ধিতে সহায়ক।
- গণেশের পূজা:
- গণেশের পূজা ও আরাধনা শুভফল বৃদ্ধিতে সহায়ক।
উপসংহার
- চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা: সিংহ লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকার ধন ও পারিবারিক জীবনে কন্যা রাশির প্রভাবে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব।
- করণীয়: এই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে মনোযোগ, অধ্যবসায়, কঠোর পরিশ্রম এবং দৈনন্দিন জীবনে নিয়মানুবর্তিতা অত্যন্ত জরুরি।
- আধ্যাত্মিক সহায়তা: সূর্য ও বুধের পূজা-মন্ত্রচর্চা এবং শিব, নারায়ণ, গণেশের আরাধনা আর্থিক সমৃদ্ধি ও পারিবারিক সুখ-শান্তি অর্জনে সহায়ক।
- চূড়ান্ত ফল: সঠিক কর্মপন্থা ও আধ্যাত্মিক চর্চার সমন্বয়ে সিংহ লগ্ন/রাশির জাতক-জাতিকা তাদের জীবনে স্থিতিশীলতা ও সাফল্য লাভ করতে পারেন।
আরো পড়ুন