- মকর রাশি হল রাশি চক্রের দশম রাশি।উক্ত রাশির অধিপতি হলেন ন্যায় এবং কর্মের অধিপতি শনি।
- রাশি চক্রের মকর ও কুম্ভ রাশির অধিপতি হলেন শনি।
- কুম্ভ রাশি হল শনির মূল ত্রিকোণ রাশি।আর মকর রাশিকে শনির সাধারণ রাশি বলা হয়।
মকর লগ্ন বা রাশিতে দেবগুরু বৃহস্পতির আধিপত্য
মকর লগ্ন বা রাশিতে গুরু উপরিউক্ত তৃতীয় ও দ্বাদশ ঘরের বিষয়গুলির প্রতিনিধিত্ব করেন। |
জন্ম কুণ্ডুলীতে গুরুর আধিপত্য
- সৌরজগতের গ্রহদের মধ্যে দেবগুরু বৃহস্পতিকে সর্বাধিক শুভ গ্রহ হিসাবে মানা হয় ।
- জ্ঞান,শিক্ষা,সন্তান,বিবাহ,স্ত্রীদের ক্ষেত্রে স্বামীর কারক,ধন-পরিবার, গুরুজন ইত্যাদির কারক মানা হয় গুরুকে।
- শারীরিক দিক দিয়ে আমাদের যকৃৎ এবং মস্তিষ্কের কারক মানা হয় দেবগুরু বৃহস্পতিকে।
লগ্ন বা রাশিতে শুভ প্রভাবযুক্ত গুরুর অবস্থান ফল
- ধর্ম-কর্মে বিশ্বাসী হন।
- ন্যায়,নীতিজ্ঞ তথা গুরুর আদর্শযুক্ত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকেন।
- সুকর্ম ও সুবিচারের অধিকারী হন।
- গুরুর আদর্শের সাথে যুক্ত হয়ে চলার মধ্যে দিয়ে উক্ত জাতক-জাতিকারা তাদের জীবনে অভূতপূর্ব সাফল্য পেতে পারেন।
- দূর্বল আর্থিক অবস্থা যুক্ত ঘরে জন্মগ্রহণ করেও গুরুর কল্যাণকারী প্রভাবের দ্বারা জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে উচ্চকোটির পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।
লগ্ন বা রাশিতে অশুভ প্রভাবযুক্ত গুরুর অবস্থান ফল
- পাপ প্রভাব যুক্ত,অশুভ ভাবের অধিপতি বা নীচ রাশিতে অবস্থান করলে বিভিন্ন সমস্যা, দুঃখ-কষ্টের সন্মুখীন হতে হয়।
- গুরুর বৈশিষ্ট্যাবলী জাতক-জাতিকার স্বভাব চরিত্রের উপর সঠিকভাবে ছাপ ছাড়তে পারে না।
- পারিবারিক, আর্থিক ,সন্তান কষ্ট, বিদ্যার্জনে বাধা ইত্যাদি সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।
- লগ্ন থেকে যেহেতু শরীরের বিচার করা হয়,তাই লিভার বা ব্রেইনের সমস্যায়ও ভুগতে হয়।
মকর লগ্ন বা রাশিতে গুরুর অবস্থান ফল
- মকর রাশিতে গুরু অবস্থান করলে,উক্ত অবস্থানকে গুরুর নীচ অবস্থান বলা হয়।
- তথা মকর রাশিতে গুরু নীচ হয়ে যান।উক্ত পর্যায়ে গুরু সঠিকভাবে ফল প্রদান করতে পারেন না ।
- গুরুর নীচ অবস্থানের কারণে গুরুর কারকতত্ত্ব সম্বন্ধীয় উপরিবর্ণিত শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
- আর্থিক,পারিবারিক,সন্তান,শিক্ষা ইত্যাদি সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।
- লগ্ন বা রাশি স্থানে গুরু নীচ অবস্থায় যদি পাপ প্রভাবযুক্ত হন, সেক্ষেত্রে অবস্থা আরও বেশী খারাপ হয়ে যায়।
মকর লগ্ন বা রাশিতে গুরুর শুভফল পাওয়ার উপায়
- গুরুর আদর্শ মেনে চলা:
- লগ্ন বা রাশিতে গুরু যে কোন অবস্থায়ই অবস্থান করুন না কেন,গুরুর আদর্শের সাথে যুক্ত হয়ে চলার মধ্যে দিয়ে গুরুর শুভফল লাভ করা যায়।
- দৈনন্দিন কাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখা:
- গুরুর শুভফল বা আশীর্বাদ পেতে দৈনন্দিন কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলা,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,ধর্ম, ন্যায়-নীতির সঠিক পালনের মধ্যে দিয়ে গুরুর শুভফল লাভ করা যায়।
- যকৃৎ ও মস্তিষ্কের কারক গুরু:
- গুরু যকৃৎ ও মস্তিষ্কের কারক।যকৃৎ ও মস্তিষ্ক তখনই ভালো থাকে,যদি উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি মেনে চলা যায়।
- ধর্মপথে চলা:
- ধর্মপথে চলার মধ্যে দিয়ে গুরুর শুভফল লাভ করা যায়।
- অপুষ্টিকর খাদ্য পরিহার করা:
- অপুষ্টিকর জনিত খাদ্য যা দেহের জন্য অনিষ্টদায়ক।
- আর যদি উপরিউক্ত নিয়মাবলী না মেনে চলা হয়,তাহলে শরীর-স্বাস্থ্য সহ সব বিষয়েই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
কুণ্ডুলীর বিভিন্ন ঘরের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার পথ
- কুণ্ডুলীর যে কোন একটি ঘরের বৈশিষ্ট্য বজায় থাকা নির্ভর করে, সেই ঘরের বিপরীত ঘরের সাথে উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তুলার উপর।
- সামঞ্জস্য যত ভালো গড়ে তোলা যায়,যে কোন একটি ঘরের বৈশিষ্ট্যও ভালো হয়।
- সামঞ্জস্য ভালো তৈরি না করতে পারলে ঘরের বৈশিষ্ট্যও ভালো হয় না।
- উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তুলতে পারলে শুধু বৈশিষ্ট্য বজায় থাকা নয়,বৃদ্ধিও হয়।
- গুরুর সপ্তম দৃষ্টি পড়ে উক্ত লগ্ন বা রাশির সপ্তম ঘরে,কর্কট রাশিতে।যে কর্কট রাশিকে গুরুর উচ্চস্থ ঘর বলা হয় ।
- সপ্তম ঘরের দৈনন্দিন করণীয় কর্মে যত বেশী ব্যালেন্স গড়ে তুলতে পারেন,ততবেশী তারা তাদের লগ্ন বা রাশিতে স্থিত গুরুর শুভফল লাভ করতে পারেন।
- সপ্তম ঘর থেকে জীবনসঙ্গী,পার্টনার বা দৈনন্দিন জীবনে আমরা যাদের সাথে বিভিন্ন প্রকারের আদান-প্রদান করি,তাদের বিচার করা হয়।
- গুরুর আদর্শ পালনের মধ্যে দিয়ে কর্ম করলে, লগ্ন বা রাশি স্থানে নীচ অবস্থায় অবস্থান রত গুরুর শুভফল লাভ করা যায়।
পূজা ও মন্ত্রোচ্চারণ
দেবগুরু বৃহস্পতির শুভফল লাভে:
- গুরুর বীজমন্ত্র সহ অন্যান্য যে কোন মন্ত্র প্রতিদিন কমপক্ষে 108 বার পাঠ করা শুভফল দায়ক।
- বৃহস্পতিবারের ব্রত পালন ।
- ভগবান বিষ্ণু ও মা লক্ষীর আরাধনা।
- নিজ নিজ কুলগুরুর পূজার্চনা ও আরাধনার মধ্যে দিয়েও গুরুর শুভফল অর্জন করা যায়।
উপসংহার
সর্বশেষে বলা যায় যে গুরুর আদর্শের সাথে যুক্ত হয়ে চলার মধ্যে দিয়ে শুভফল লাভ যায় দ্বারা জীবনে সুখ ও শান্তি অর্জন করা যায়।
🔗 আরো পড়ুন