জ্যোতিষ শাস্ত্রে জন্ম কুণ্ডুলীর নবম ঘরকে ভাগ্যের ঘর বলা হয়। কুণ্ডলীতে উক্ত ঘরের শুভাশুভ অবস্থানের উপর নির্ভর করে আমাদের জীবনের সুখ-সুবিধা, আয়-উন্নতি।
- ভাগ্যের ঘর কুণ্ডলীতে বলবান অবস্থায় থাকলে জীবনে সুখ-সুবিধা, আয়-উন্নতি অধিক মাত্রায় লাভ হয়।
- ভাগ্যের ঘর যত দুর্বল হবে,জীবনে দুঃখ-কষ্ট ও বিভিন্ন প্রকারের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
- তাই জন্মছকের ১২টি ঘরের মধ্যে ভাগ্যের ঘরকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘর বলা হয়।
কর্মের গঠনে ভাগ্যের ভূমিকা
- ভাগ্যের ঘরের পরবর্তী ঘর হলো কর্মের ঘর বা দশম ঘর।
- আমাদের জন্ম কুণ্ডুলীর প্রথম ঘরের পরবর্তী ঘরকে তথা দ্বিতীয় ঘরকে ধনের ঘর বলা হয়।
- ঠিক তেমনি নবম ঘরের পরবর্তী ঘর তথা দশম ঘর হলো ভাগ্যের ধনের ঘর।
- আবার দ্বিতীয় ঘর গঠিত হয় লগ্ন বা রাশির ব্যয় বা খরচের ঘর দ্বারা।
- অর্থাৎ স্বয়ং ব্যক্তি বা ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের ব্যয়ের মধ্য দিয়ে।
- তেমনি দশম ঘর বা কর্মের ঘর গঠিত হয় নবম বা ভাগ্যের ঘরের ব্যয় বা খরচের মধ্য দিয়ে।
- কুণ্ডলীর দ্বিতীয় ঘর গঠিত হয় লগ্ন বা রাশির ব্যয় দ্বারা, অর্থাৎ জাতক-জাতিকার শারীরিক ব্যয় বা ব্যক্তিত্বের ব্যয় দ্বারা।
- অর্থাৎ শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ঘর বা ধনের ঘরের গঠন হয়।
- তেমনি নবম ঘরের বা ভাগ্যের ঘরের ব্যয়ের মধ্য দিয়ে কর্ম বা দশম ঘরের গঠন হয়।
- ভাগ্যের ঘর থেকে যেহেতু ধর্ম, উচ্চশিক্ষা ইত্যাদির বিচার করা হয়, তাই ধর্মজ্ঞান ও উচ্চশিক্ষা যত ভালো বা উচ্চমানের হয়, কর্মের গঠনও তত ভালো বা উচ্চমানের গঠন হয়।
কর্মের গঠনে শিক্ষা ও জ্ঞানের মহত্ব
- কর্মের গঠনে ধর্ম ও শিক্ষা দুটিরই সমান প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
- শুধু ধর্মজ্ঞান দ্বারাও কর্ম ভালো করা যায় না, যদি না সেই ধর্মজ্ঞানে উচ্চশিক্ষার প্রভাব না থাকে।
- শুধু উচ্চশিক্ষিত হলেও কর্ম ভালো করা যায় না, যদি না সেই উচ্চশিক্ষায় ধার্মিক জ্ঞানের সংযুক্তি না ঘটে।
- ধর্মজ্ঞান এবং উচ্চশিক্ষার মেলবন্ধন দ্বারাই আদর্শ মানের কর্মের গঠন করা যায়।
- ধর্মজ্ঞান কম হলে আমাদের কর্মেও ধর্মের প্রয়োগ কম হবে।
- তেমনি যদি উচ্চশিক্ষা কম অর্জিত হয়, তবে কর্মক্ষেত্রে গুণগত শিক্ষার ব্যবহারও কম হবে।
- ফলস্বরূপ কর্মের গঠনও দুর্বল হবে। আর যদি কর্মের গঠন দুর্বল হয়, তাহলে ধন-পরিবারের গঠনও দুর্বল হবে,যার কারণে জীবনে সুখ-সুবিধার সঞ্চয়ও কম হবে।
- তাই আমাদের সুখ-শান্তির মূল বিষয় হলো জন্ম কুণ্ডুলীর নবম ঘরের ধর্মীয় জ্ঞান এবং উচ্চ শিক্ষা।
- উচ্চশিক্ষার পরিবর্তে যদি সাধারণ শিক্ষাও লাভ করা যায়, তবুও সুখ-শান্তি সম্ভব। কিন্তু ধর্ম ছাড়া সত্যিকারের সুখ কখনোই লাভ করা যায় না।
- কর্ম ও ধর্মের সংযুক্তি না ঘটলে ধনসম্পদের দিক থেকে সুখী হলেও পারিবারিক বা স্বাস্থ্যগত বা মানসিক দিক থেকে সুখী হওয়া যায় না।
- কর্ম ও ধর্মের সংযুক্তি ঘটলে জীবনের সব দিকেই সুখী হওয়া সম্ভব।
- ধর্মের পথ ঈশ্বরপ্রদত্ত এমন একটি পথ, যার মধ্য দিয়ে চললে জীবনের সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করা যায় এবং সুখী হওয়া যায়।
- আমরা যত বেশি ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারবো, তত বেশি কর্মক্ষেত্রে তার ব্যবহার করতে পারবো। আমাদের কর্মও হবে ধর্মসম্মত।
- আমরা যত বেশি উচ্চ শিক্ষা অর্জন করবো, ততই কর্মক্ষেত্রে তার ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মের উচ্চ মানের গঠন করতে পারবো।
- ধর্মীয় জ্ঞান ও উচ্চ শিক্ষা যথাযথভাবে অর্জন করতে না পারলে কর্মের গঠনও দুর্বল হয় এবং জীবনে সুখ-সুবিধার প্রাপ্তিও কম হয়।
উপসংহার
- পার্থিব সুখ-শান্তি প্রাপ্তির মূল রসদ হলো উচ্চ স্তরের কর্ম।
- আর সুকর্মের গঠন করা যায় উচ্চশিক্ষা আর ধর্মজ্ঞানের মেলবন্ধনের মধ্য দিয়ে।
- তাই উচ্চশিক্ষা আর ধর্মপথ অবলম্বনের মধ্য দিয়েই আমরা প্রকৃত সুখ-শান্তি লাভ করতে পারি।
আরো পড়ুন
- লগ্ন ও রাশিতে কেতু ও শুভফল লাভের উপায়।
- ধন ও পারিবারিক সমস্যায় ন্যায়-নীতির ভূমিকা ।
- কর্কট লগ্ন ও রাশির পরিশ্রমের সহজ উপায়।
- মিথুন লগ্ন ও রাশিতে মঙ্গলের প্রভাব ও প্রতিকার।