লগ্ন ও রাশিতে গুরু ও শুভফল লাভের উপায়।

Astrobless
By -

  • লগ্ন ও রাশির গুরুত্ব

  • লগ্ন: 

  • লগ্ন শরীর, ব্যক্তিত্ব এবং বাহ্যিক পরিচয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি জাতকের শারীরিক গঠন, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক উপস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত। লগ্নের শুভ অবস্থান জীবনে সাফল্য ও সম্মান নিয়ে আসে।

  • রাশি: 

  • রাশি মন, আবেগ এবং মানসিকতার প্রতীক। এটি ব্যক্তির চিন্তাভাবনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং মানসিক স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলে।

  • শরীর ও মনের প্রভাব: 

  • শরীর ও মন সুস্থ থাকলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচকতা ও সাফল্য লক্ষ্য করা যায়। 
  • বিপরীতে, শরীর বা মনের অসুস্থতা জীবনে নানা সমস্যা, কষ্ট এবং বাধা সৃষ্টি করে। 
  • এই দুটির ভারসাম্য জীবনযাত্রার মান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  • রাশি চক্রে গুরুর অবস্থান

  • দেবগুরু বৃহস্পতি রাশি চক্রের নবম ও দ্বাদশ ঘরের অধিপতি। এই দুটি ঘর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত:

  • নবম ঘর: 

  • ধর্ম, জ্ঞান, ভাগ্য, উচ্চশিক্ষা এবং পিতার প্রতিনিধিত্ব করে। শুভ গুরু এই ঘরে থাকলে ব্যক্তি ধার্মিক, জ্ঞানী এবং ভাগ্যবান হয়।

  • দ্বাদশ ঘর: 

  • ব্যয়, খরচ এবং মোক্ষের সঙ্গে যুক্ত। এই ঘরে গুরুর শুভ প্রভাব ব্যক্তিকে উদার এবং আধ্যাত্মিক করে তোলে।

  • শুভ গুরু: 

  • যদি গুরু পাপ গ্রহের প্রভাবমুক্ত থাকেন, তবে জাতক ধর্মপরায়ণ, জ্ঞানী, ভাগ্যবান এবং ধর্ম-কর্মে ব্যয়শীল হন।

  • অশুভ গুরু: 

  • পাপ গ্রহের প্রভাব বা দুর্বল অবস্থানের কারণে গুরুর শুভ গুণাবলী প্রকাশে বাধা পড়ে। এতে ধর্ম, জ্ঞান ও ভাগ্যে অভাব দেখা দেয়।

  • গুরু গ্রহের গুরুত্ব

  • দেবগুরু বৃহস্পতি জ্যোতিষশাস্ত্রে সর্বাধিক শুভ গ্রহ হিসেবে বিবেচিত। তিনি জ্ঞান, শিক্ষা, সন্তান, আত্মীয়-স্বজন এবং সমৃদ্ধির কারক। 
  • গুরুর শুভ প্রভাব জাতকের জীবনে সাফল্য, সম্মান এবং সুখ নিয়ে আসে।

  • শুভ প্রভাব:

  • লগ্ন বা রাশিতে শুভ গুরু অবস্থান করলে জাতক নম্র, শান্ত, মধুরভাষী এবং পরোপকারী হন। তাঁদের জীবন সাফল্য ও সমৃদ্ধিতে পূর্ণ হয়।
  • দুর্বল আর্থিক অবস্থায় জন্মগ্রহণ করলেও গুরুর কল্যাণকর প্রভাবে জীবনযাত্রা উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।

  • অশুভ প্রভাব:

  • পাপ প্রভাবযুক্ত বা দুর্বল গুরু জ্ঞান, সন্তান, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং স্বাস্থ্যে বাধা সৃষ্টি করে।

  • সমস্যা

  • লিভার জনিত সমস্যা, মস্তিষ্কের সমস্যা, পারিবারিক ও আর্থিক কষ্ট, সন্তান সম্পর্কিত সমস্যা এবং জ্ঞানার্জনে বাধা।

  • গুরুর শুভফল অর্জনের উপায়

  • গুরুর শুভফল লাভের জন্য তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। 
  • গুরুর আদর্শ মানে দৈনন্দিন জীবনে নিয়মানুবর্তিতা, পরিচ্ছন্নতা এবং ধর্ম ও ন্যায়-নীতির পালন। 

  • নিম্নলিখিত উপায়গুলি গুরুর শুভফল অর্জনে সহায়ক:

  • নিয়মানুবর্তিতা ও পরিচ্ছন্নতা: 

  • প্রতিদিনের জীবনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং নিয়ম মেনে চলা।

  • ধর্ম ও ন্যায়-নীতি: 

  • ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণ, ন্যায়ের পথে চলা এবং সৎকর্মে মনোযোগ দেওয়া।

  • আচরণ: 

  • সকলের সঙ্গে নম্র, শান্ত এবং মধুরভাষী আচরণ করা।

  • Ways to Attain Auspicious Results from Jupiter in Ascendant and Sign.

    লগ্ন ও রাশিতে গুরুর শুভফল

  • শুভ অবস্থান:

  • লগ্ন বা রাশিতে শুভ গুরু অবস্থান করলে জাতক অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করেন। তাঁদের ব্যক্তিত্বে গুরুর গুণাবলী যেমন নম্রতা, শান্তি এবং পরোপকারিতা প্রকাশ পায়।
  • দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও গুরুর শুভ প্রভাবে জীবনযাত্রা উন্নত হয় এবং উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।

  • অশুভ অবস্থান:

  • পাপ প্রভাবযুক্ত বা দুর্বল গুরু জীবনে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। এর ফলে আর্থিক, পারিবারিক এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়।
  • গুরুর বৈশিষ্ট্য যেমন জ্ঞান, ধর্ম এবং ভাগ্য জাতকের স্বভাবে সঠিকভাবে প্রকাশ পায় না।

  • শুভফল লাভের ব্যবহারিক উপায়

  • নিয়মানুবর্তিতা ও পরিচ্ছন্নতা: প্রতিদিনের জীবনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং নিয়ম মেনে চলা গুরুর শুভফল লাভে সহায়ক।

  • সপ্তম ঘরের প্রভাব:

  • লগ্ন বা রাশিতে গুরুর অবস্থান সপ্তম ঘরে তাঁর দৃষ্টি ফেলে। সপ্তম ঘর জীবনসঙ্গী, ব্যবসা, পার্টনারশিপ এবং আদান-প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত।
  • এই ঘরের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সঙ্গে গুরুর আদর্শ মেনে চললে শুভফল লাভ হয়।

  • মন্ত্র ও পূজা:

  • গুরুর বীজমন্ত্র জপ এবং ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা শুভফল লাভে সহায়ক।
  • গুরুবারে নিরামিষ ভোজন এবং পূজাপাঠ গুরুর আশীর্বাদ লাভে ফলদায়ক।
  • কুলগুরুর নির্দেশিত মন্ত্রপাঠ এবং পূজা গুরুর শুভ প্রভাব বাড়ায়।

  • পীড়িত গুরু:

  • যদি গুরু অধিক পীড়িত হন এবং জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করেন, তবে গুরুর বীজমন্ত্র জপ এবং বিষ্ণু পূজা অত্যন্ত ফলদায়ক।

  • উপসংহার

  • দেবগুরু বৃহস্পতি জন্ম কুণ্ডলীতে যে অবস্থানেই থাকুন না কেন, তাঁর আদর্শ মেনে চলার মাধ্যমে শুভফল লাভ করা সম্ভব। 
  • নিয়মানুবর্তিতা, পরিচ্ছন্নতা, ধর্ম ও ন্যায়-নীতির পালন এবং পূজাপাঠের মাধ্যমে গুরুর আশীর্বাদ অর্জন করা যায়। এই আশীর্বাদ জীবনে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। 
  • গুরুর শুভ প্রভাব জাতকের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করে এবং সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেয়।